ইয়োগা-Yoga মূলত সংস্কৃত শব্দ। বাংলায় যার মিনিং যোগ অর্থাৎ সংযুক্ত করা।

ইয়োগা শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে ‘যুবক’ বা ‘যৌবন’। অর্থাৎ মানুষের দেহ ও মনের যৌবন ধরে রাখার কৌশল। এটা নিয়ে অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন। কেউ বলেছেন আত্মা বা মন ও শরীরকে একত্র করার কৌশলকে ইয়োগা বা যোগ বলে। হট্-যোগ/ইয়োগা শাস্ত্র অনুযায়ী দেহের অরগ্যান গুলোর কার্য ক্ষমতাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করে স্নায়ুতন্ত্রের সম্পূর্ণ পরিচর্যার মাধ্যমে মনের এবং শরীরের সম্পর্কের সূত্র গুলোকে প্রাকৃতিক ভাবে একাত্ম বা সংযোগ করা’ই হচ্ছে যোগ বা ইয়োগা।

ইয়োগা একটা পূর্ণাঙ্গ লাইফ স্টাইল আসন বা ব্যায়াম হচ্ছে ইয়োগা/যোগ এর একটি অংশ মাত্র। খ্রীষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকের ভারতীয় আর্যঋষি “পতঞ্জলিকে” আধুনিক যোগশাস্ত্রের জনক বলে ধরা হয়।

তিনি’ই যোগসূত্রে’র ১৯৫ টি সূত্র সংকলনের মাধ্যমে যোগের নীতিমালা বা গাইড লাইন প্রকাশ করেন যেটা The Yoga Sutra of Patanjali নমে পরিচিত।

পতঞ্জলি এ যোগ সাধনাকে আটটি ভাগে বা শাখায় বিভক্ত করেছেন এই আটটি পর্যায়কে The eight limbs of Patanjali বা’ পতঞ্জলির অষ্টঅঙ্গ যোগ বলা হয়।

পতঞ্জলির অষ্ট যোগাঙ্গ গুলো হচ্ছে :

  • যম/সংযম – Yama
  • নিয়ম – Niyama
  • আসন – Asana
  • প্রাণায়াম -Pranayama
  • প্রত্যাহার – Pratyahara
  • ধারণা – Dharana
  • ধ্যান – Dhyana
  • সমাধি – Samadhi

 

কিন্তু এর মধ্যে ৩’টি শাখা বিশ্বব্যাপী অধিক সমাদৃত। এগুলো হলো আসন/শারীরিক ব্যায়াম প্রাণায়াম/নিশ্বাসের ব্যায়াম এবং ধ্যান/মেডিটেশন একজন সাধারণ মানুষের জন্যে এই তিন শাখা নিয়মিত চর্চা করে নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখা সম্ভব।

আধুনিক এ বিজ্ঞানের যুগে ইয়োগা এতটা’ই মানুষের গ্রহনযোগ্যতা অর্জন করেছে যে’ ২০১৪ সালের ১১ ই ডিসেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ প্রতি বছর ২১’ জুনকে বিশ্ব যোগ দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

যোগব্যায়াম/ইয়োগা চর্চা ধর্ম এবং বিশ্বাসের বাইরে একটি বিজ্ঞান। যেটা কিনা সর্বজনীন ভাবে গ্রহণ যোগ্য। এটি আমাদের জীবনের সাথে সম্পর্কিত সমস্ত শারীরিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক, মানসিক দিকগুলিতে সহজ বোধ্য করে তোলে। অর্থাৎ আমাদের দেহ এবং মন এই ২’এর মধ্যে একটা সমন্বয় ঘটিয়ে জীবনকে অনেক আনন্দময় এবং নীরোগ করে তোলে। জীবন’টা হয়ে উঠে অর্থবহ।

Leave a Comment