সুস্থ এবং ভালো থাকতে ইয়োগা

ভিষণ রকম ব্যাস্ততায় আমাদের নিত্যকার জীবন। প্রতিদিনকার নানান কাজ আর এই ব্যস্ততার মাঝে নিজেকে ফিট-সুস্থ রাখাটাই বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। একই সাথে জীবনকে সঠিক তালে মানিয়ে নিতে মানসিক প্রশান্তি এবং স্থিরতা’ও খুব প্রয়োজনীয়। এ’দুটি বিষয়ের সম্মীলন ঘটানোর জনপ্রিয় সহজ উপায় হলো ইয়োগা বা যোগব্যায়াম।

 

আধুনিক এ’ সময়ে ফিটনেস এর প্রসঙ্গ আসলে’ই বিশ্বজুড়ে ইয়োগা একটি সর্বজনীন গ্রহণ যোগ্য ফিটনেস মাধ্যম হিসেবে বিবেচ্য। অনেকে ইয়োগাকে সভ্য মানুষের লাইফ স্টাইল হিসেবেও একে সাব্যস্ত করেন। মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের ক্লান্তি-টেনশন বা স্ট্রেস দূর করে শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা বাড়াতে ইয়োগা হতে পারে এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

শারীরিক-মানসিক এবং সর্বপরি আত্মিকভাবে সুস্থ থাকতে ইয়োগা’কে কেন বেছে নিবেন?

 

 

আসুন এ বিষয়ে আলোকপাত করা যাক।

প্রথমত: ইয়োগা সব ধরনের এবং সব বয়সের মানুষের জন্যই উপযোগী। সবচেয়ে সহজ বিষয় হলো এতে নির্দিষ্ট কোন ফিটনেসের প্রয়োজন পরে না। যে কোন বয়সের মানুষই ইয়োগা শুরু করতে পারে এবং এর থেকে উপকৃত হতে পারেন।

দ্বিতীয়ত: ইয়োগার বিভিন্ন প্রকার ভেদ আছে। আপনি আপনার পছন্দ এবং সুবিধামতো বেছে নিতে পারবেন যেকোন টাইপের ইয়োগা পদ্ধতি। হাট ইয়োগা, পাওয়ার ইয়োগা, রিলাক্সেশন ইয়োগা, প্রেনাটাল ইয়োগাসহ বিভিন্ন রকমের ইয়োগা রয়েছে যা আপনি বাড়িতে বসেই চেষ্টা করতে পারেন।

তৃতীয়ত: মানুষের জীবন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং আর তাই মানসিক স্থিরতা এবং শারীরিক সুস্থতায় ইয়োগা রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এমনকি একজন প্রাক্টিসনার নিজের প্রয়োজন বুঝে ইয়োগার স্টাইলও বদলে ফেলতে পারেন।

 

ঘরে বসে সুস্থ থাকতে ইয়োগা বা’ যোগ-ব্যায়াম করার টিপস্

# শুরুতেই যে’ বিষয়টি প্রয়োজন সেটা হলো নিজের ইচ্ছা। নিজেকে ইয়োগার জন্য মানুষিক ভাবে প্রস্তুত করা।

# ইয়োগা প্র্যাকটিস-এর জন্য ঘরের শান্ত ও পরিষ্কার একটি স্থান বেছে নিন এবং জায়গাটিতে ইয়োগার জন্য প্রয়োজনীয় ম্যাট, চাদর বা’ পাটির ব্যবস্থা রাখুন।

# নিজের লক্ষ্য স্থির করার ব্যাপারে বাস্তবসম্মত চিন্তা করুন। প্রথম দিকে অনেকক্ষণ ধরে ইয়োগা করবার দরকার নাই, প্রথম দিকে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখুন।

# সাধারণত খালি পেটেই ইয়োগা শুরু করা সমুউচিত আথবা খাবার খাওয়ার দুই/তিন ঘণ্টা পরে করতে পারেন।

# ইয়োগা করার সময় হালকা পোশাক অর্থাৎ নিজে যে পোশাকে আরামবোধ করেন সেটাই পরে নিন।

# সুস্থ থাকতে ইয়োগা করতে শুরু করুন, একদম’ই বেসিক ইয়োগা দিয়ে। এরপর নিজের দক্ষতা বাড়লে আস্তে আস্তে নিজের সুবিধা মতো স্টেপ পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।

# ইয়োগার কোন বেসিক ভিডিও (অনলাইনে একদম এভেইল এবেল) সাথেই রাখবেন এবং ধীরে ধীরে চেষ্টা চালিয়ে যান। ইয়োগা ভিডিও বাছাই করার ব্যাপারেও নিজের সামর্থ এবং স্বস্তির দিকটায় খেয়াল রাখুন।

# শুরু করুন ফ্লোর বা’ ওয়ার্ম আপ এক্সারসাইজ দিয়ে অথবা সুস্সাম/সূক্ষ্ণ ব্যায়াম দিয়েও শুরু করতে পারেন।

# আস্তে আস্তে সাধারণ কৌশল বা আসন গুলো রপ্ত এবং অনুশীলন করার চেষ্টা করুন। তবে একই আসন বার বার না করে বিভিন্ন কৌশল বা আসন শিখতে চেষ্টা করুন।

# এক মনে মনোযোগ দিয়ে ইয়োগা করুন। ইয়োগা করার সময় নিজের শরীর, সময় ছাড়া অন্য কোন কিছু নিয়ে ভাবা চলবে না। একমনে নিবিষ্টচিত্তে এক্সারসাইজ করে যান। তবেই প্রকৃত অর্থে উপকৃত হবেন।

# ইয়োগা করা শেষ হলে নিজেকে কিছুটা সময় দিন, সবাসন করুন বিশ্রাম নিন, পানি খান, দেখবেন মন’টা একদম ফুরফুরে হয়ে উঠেছে।

# সম্ভব হলে পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে একসাথে ইয়োগা করুন। এতে করে পরিবারের সদস্যরা’ও নিজেদের মাঝে বেশ কার্যকরী ও স্বতস্ফুর্তভাবে সময় কাটাতে পারবেন এবং সবার মাঝে আন্তরিকতা’ও বেড়ে যাবে।

 

 

ইয়োগা কেবল একটি এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম’ই নয় ইয়োগা একটি লাইফ স্টাইল পদ্ধতি।
মানুষকে ওয়েল বিয়িং হওয়ার একটি মাধ্যম’ও বটে।

আসুন আমরা ইয়োগার সাথে থাকি শারিরীক মানুষিক এবং আত্মিক প্রশান্তির পথ বেছে নেই।

Leave a Comment