কোন রোগ কমাতে কোন ধরনের ইয়োগা আসন উপযোগী আসুন জেনে নেয়ার চেষ্টা করব। ইয়োগা কেবল একটি ব্যায়াম বা শরীর চর্চার মাধ্যমই নয়, ইয়োগা একটা জীবন যাপন পদ্ধতিও বটে। ইয়োগিক লাইফ স্টাইল মেনে চলতে পারলে শারীরিক মানুষিক এবং আত্মিক প্রশান্তি পাওয়া অনেকাংশেই সহজতর হয়ে উঠে।
মানসিক অস্থিরতা, জড়তা এবং অবসন্ন ভাব কাটাতে সাহায্য করে ইয়োগা। রাগ, ক্রোধ, চঞ্চলতার মতো মনের বেশ কিছু অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইয়োগা সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। শারীরিক সুস্থতা এবং প্রশান্তির জন্য নিয়মিত ইয়োগা অভ্যাস অত্যন্ত প্রয়োজন। শরীর এবং মন এ’ দু’য়ের মাঝে সমন্বয় ঘটানোর জন্য ইয়োগার গুরুত্ব অপরিসীম। ইয়োগাকে কেন শরীরচর্চার মাধ্যম হিসেবে আমরা বেছে নিব? আসুন সে বিষয়ে জেনে নেই।
নিয়মিত ইয়োগা টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে চলে আসুন!
প্রথমত: ইয়োগা হল এক মাত্র প্রাকৃতিক উপায় যা’কিনা বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ শারীরিক গঠন ঠিক করে এবং সমগ্র শরীর জুড়ে কাজ করে।
দ্বিতীয়ত: প্রতিদিন নিয়মানুযায়ী ইয়োগা অনুশীলন করলে অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরতে সাহায্য করে ফলে শারীরিক সুস্থতা বজায় থাকে।
তৃতীয়ত: ইয়োগ যেকোনও জায়গায় এবং যেকোনও সময় (কেবল খাবার ২’ ঘন্টা পর)করা যাতে পারে৷ এর জন্য কোনও নিদিষ্ট জায়গা বা সরঞ্জামের প্রয়োজন পরে না’।
চতুর্থত: নিয়মিত ইয়োগা অভ্যাস মন এবং শরীরের উপর সম্পূর্ণ সঠিক নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে যা রোগের ঝুঁকি কমায় বহুলাংশে এমনকি নিরোগ হতেও বিষয় ভূমিকা রাখে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোন রোগ কমাতে কোন ইয়োগা আসন সবচেয়ে উপকারী।
শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা:
এ শারীরিক সমস্যা মোকাবিলায় সিদ্ধাসন খুবই কার্যকরী। মেরুদণ্ড সোজা করে পা গুটিয়ে বসে ধীরে ধীরে লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। এটি দেখতে অনেকটা পদ্মাসনের মতোই। সিদ্ধাসনে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় সেই সঙ্গে ফুসফুসের অক্সিজেন প্রবাহ ঠিক করে এবং এর কার্যক্ষমতাও বাড়ে।
হজমের সমস্যা:
হজমের সমস্যা কমাতে এবং দূর করতে পবনমুক্তাসন বা সুপ্ত বজ্রাসন করা খুবই কার্যকর। পবনমুক্তাসনে চিৎ হয়ে শুয়ে প্রথমে ডান পা ভাঁজ করে পেটের সঙ্গে টেনে লাগাতে হবে। বাঁ পা তখন সোজা থাকবে। এর পরে একই ভাবে বাঁ পা ভাজ করে পেটে লাগতে হবে। ডান পা তখন সোজা থাকবে।
নিয়মিত এ ইয়োগা আসনটি করলে গ্যাস, অম্বল, হজমের সমস্যা, আমাশয়,কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। পরিপাকতন্ত্র খুবই উপকৃত হয়।
হাঁটুর ব্যথা:
হাঁটুর ব্যথা থেকে নিরাময়ের জন্য উত্থানপদাসন করলে উপকার পাওয়া যাবে। চেয়ারে বসে বসে পা তোলা ও নামানো অর্থাৎ সিটেড লেগরাইজ বা পেলভিস ব্রিজ (চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে উপরের দিকে তোলাকে পেলভিস ব্রিজ বলা হয়) করা খুবই উপকারে আসবে। এতে থাইয়ের পেশি সঙ্কুচিত বা প্রসারিত হয় এবং প্রচুর আরাম বোধ হয়।
কোমরের যন্ত্রণা:
কোমরের যন্ত্রণা কমাতে ভুজঙ্গাসন একটা উত্তম ইয়োগা আসন। উপুড় হয়ে শুয়ে একটা পা উপরে তুলে সলভাসন বা পবনমুক্তাসন করলেও ভাল ফল পাওয়া যায়।
নিয়মিত ইয়োগা টিপস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে চলে আসুন!
ঘাড়ের ব্যাথা:
ঘাড়ের যন্ত্রণার জন্য আইসোমেট্রিক প্রেসার অভ্যাস করলে বেশ ভালো ফল মিলবে। দু’হাত মাথার পিছনে নিয়ে মাথাকে হাত দিয়ে ঘাড় সোজা করে চাপ দিতে হবে। এ ভাবে মাথাকে চার দিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চাপ দিতে হবে। চিৎ হয়ে শুয়ে (ভুজঙ্গাসন) থেকে চিবুকে হাত দিয়ে চাপ দিলেও ঘাড়ের উপর চাপ পড়ে ফলে ঘাড়ের ব্যাথার উপশম হয়।
পেট ও নিতম্বের চর্বি কমাতে:
পেট ও নিতম্বের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে অর্ধকূর্মাসন খুবই কার্যকরী। মাটিতে বজ্রাসনে বসুন। এইবার হাত দুটি সোজা করে মাথার ওপরে তুলে জড়ো করে রাখুন। পেট এবং বুক যেন ঊরুর সঙ্গে লেগে থাকে। এই অবস্থায় ১৫/২০ সেকেন্ড অবস্থান করুন,পরে ধীরে ধীরে সোজা হয়ে বসে শবাসনে বিশ্রাম নিন।
আমাদের বর্তমান সময়ের স্ট্রেসফুল জীবনকে সহজ সরল এবং নিরোগ করতে ইয়োগা একটি মোক্খম লাইফ স্টাইল পদ্ধতি। আসুন আমরা সকলে ইয়োগা চর্চায় অভ্যস্ত হই এবং নিজেদের জীবনকে আনন্দে ভরে তুলি। ধন্যবাদ।