আমাদের অনেকের কাছেই ওজন কমানো একটি কঠিন চ্যালেঞ্জিং বিষয়। ওজন কমানোর চেষ্টা করতে গিয়ে আমরা অনেকেই হতাশ হয়ে যাই। প্রতিটি মানুষের শারীরিক গঠনই বেশ আলাদা আলাদা, যেহেতু সবার শরীরেই পার্থক্য রয়েছে, তাই একজনের ওজন দ্রুত কমলে’ও অন্যের ক্ষেত্রে আবার সেটা নাও কমতে পারে। আর এর জন্যই বেশিরভাগ মানুষই কনফিউশানে থাকেন যে’ ওজন কমাতে গেলে আসলে তাদের কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়।
আমাদের দৈনন্দিন নিত্য রুটিনে ন্যূনতম কিছু পরিবর্তন এবং পরিবর্ধনের মাধ্যমেই শারিরীক ওজন সহজেই কমানো যেতে পারে। সকলে এমনটাই মনে করেন যে ওজন কমানোর জন্য কেবল ডায়েট এবং ব্যায়াম করলেই কাংখিত লক্ষে পৌঁছানো সম্ভব। বিষয়টা অনেকাংশে ঠিক হলেও এর পাশাপাশি ওয়েটলসের জন্য আরো কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা বা জ্ঞান থাকলে বিষয়টা আরো সহজসাধ্য এবং দ্রুত হবে।
কার্ব বর্জন নয়:
সুস্থ থাকতে নিয়মিত এবং পরিমিত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা প্রয়োজন। কার্বোহাইড্রেট আমাদের শত্রু নয়। আমাদের অনেকেই ওজন কমাতে গেলেই সবার আগে কার্ব বাদ দেন, যেটা একদমই ঠিক নয়। প্রোটিনের মতোই শরীরে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণও অনেক জরুরী। কার্বোহাইড্রেট দীর্ঘক্ষণ ধরে পেট ভরা রাখে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য শরীরের শক্তি যোগায়। ফলে প্রোটিনের মতোই প্রতিবেলার খাবারে পরিমিত কার্বোহাইড্রেট খাওয়াটাও অপরিহার্য।সবজি ও গোটা শস্যের মতো কম ক্যালোরিযুক্ত কার্বোহাইড্রেট দ্রুত ওজন কমাতে সহায়ক।
মাইন্ড সেট ঠিক রাখুন:
আমরা অনেকেই বারবার ওজন কমাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে পরি।কারণ আমাদের মন অস্থির চঞ্চল। বেশিরভাগ মানুষেই নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। আমাদের অনেকেই মানসিক চাপের কারণেও অতিরিক্ত বা ভুল বা আন-হেলদি খাবার খেয়ে ফেলি। আর তাই সঠিক কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে অবচেতন মনের চিন্তাকে সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে মানসিকতায় ইতিবাচক পরিবর্তন করে ওজনকে আয়ত্তে আনা সম্ভব। প্রয়োজনে থেরাপিস্টের পরামর্শ বা সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
পরিমিত ঘুম:
আধুনিক নতুন সংস্কৃতির জীবন যাপন স্টাইলে আমরা আনেকেই রাতে জেগে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি এবং আমাদের অনেকেই ঘুমের বিষয়ে উদাস এবং অবহলা করি। ফলে এর একটা বিরূপ প্রভাব আমাদের শরীরের উপর পরে। ওজন কমাতে চাইলে আমাদের অবশ্যই কেয়ারফুল থাকতে হবে যেন দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা নির্ঘিগ্ন ঘুম শরীর পায়। সঠিক ঘুমের প্যাটার্ন দ্রুত ওজন কমাতে এবং শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে যথেষ্ট সাহায়ক।
একটিভ থাকুন:
সারাদিন সক্রিয় বা একটিভ থাকুন। কেবলমাত্র শুয়ে-বসে সময় কাটানো একেবারেই ঠিক নয়। শারীরিক মুভমেন্টে সক্রিয় থাকতে চেষ্টা করুন। ব্যায়াম বা ইয়োগা করা এবং হাঁটায় অভ্যস্ত হন, ফোনে কথা বলার সময় পায়চারি করুন, সম্ভব হলে লিফট এভয়েড করুন, প্রয়োজনে মার্কেট কিংবা দোকানে গিয়ে নিজেই নিজের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনুন।
পার্টার বা সঙ্গী সাথে শেয়ার করুন:
আমরা অনেকেই ওজন কমাতে গিয়ে নিঃসঙ্গতা অনুভব করি।একঘেয়েমি পেয়ে বসে আমাদের, তাই একজন পার্টনার বা সঙ্গী থাকলে অনুপ্রেরণা, আনন্দ এবং সাহস পাওয়া যায়, তার সাথে কথা শেয়ার করা যায়, ফলে ওজন কমানোর যাত্রার চ্যালেঞ্জ সহজতর হয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে আমরা শারীরিক নানাবিধ চ্যালেঞ্জ খুব সহজেই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি ফলে আমাদের জীবন যাপনও অনেকটা’ই সহজতর হয়ে উঠে। আমাদের সকলের জীবন সুস্থ সুন্দর এবং সহজতর হোক এই প্রত্যাশা রইলো।
ধন্যবাদ।