আপনার স্ট্রেস রিলিস করবে যে ইয়োগা

ঘরের কাজ, অফিসের কাজ ঠিক সময় মতো করতে গিয়ে বিশ্রাম নেওয়াই হচ্ছে না। রাতে ঘুমও হচ্ছে না। ফল পরের দিন সকালে একরাশ ক্লান্তি, কাজে ভুল হওয়া। এই সব কিছুরই সমাধান করতে পারে যোগাসন। যা স্ট্রেস কমানোর ক্ষমতার কারণে ইয়োগা দীর্ঘদিন ধরে প্রশংসিত। উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা ও উদ্বেগ কমাতে তাই অনেকেই যোগাসনের দিকে ঝুঁকছেন। যার ফলে তারা আরও রিল্যাক্সড বোধ করেন এবং কম ইরিটেটেড অনুভব করেন। চাপ কমাতে আপনিও করতে পারেন স্ট্রেস রিলিস করার ইয়োগা

স্ট্রেস রিলিস করার জন্য কিছু কাল্মিং ইয়োগা পোজ যা স্ট্রেস উপশম করতে পারে এবং আপনার প্রতিদিনের প্রেশার কমাতে পারে।

ত্রিকোণাসন

এই আসনটি একটি ত্রিভুজের মতো করে করা হয়ে থাকে তাই এর নাম ত্রিকোণাসন বলা হয়। নামটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ (ত্রিকোনা), যার অর্থ ত্রিভুজ এবং (আসন), যার অর্থ ভঙ্গি। এই আসনটি পেশী প্রসারিত করতে এবং নিয়মিত শারীরিক কার্যকারিতা উন্নত করতে পরিচিত।প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়ান এবং আপনার পাগুলিকে প্রায় আড়াই থেকে তিন ফুট দূরে রাখুন। আপনার ডান পা ৯০ডিগ্রীতে বাইরে এবং আপনার বাম পা ১৫ ডিগ্রীতে রাখা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করুন। একটি গভীর শ্বাস নিন এবং পা থেকে কোমর পর্যন্ত সোজা শরীর বজায় রাখুন এবং সামনে বা পিছনে না ঝুঁকে ধীরে ধীরে ডানদিকে বাঁকা করুন।

আপনার আরামের স্তরের উপর নির্ভর করে, আপনার ডান হাত আপনার শিন, গোড়ালি বা আপনার ডান পায়ের বাইরে মেঝের ওপর রাখতে পারেন। আপনি যেখানেই আপনার হাত রাখুন না কেন, নিশ্চিত করুন যে আপনি কোমরের পাশে বিকৃত করছেন না। আপনার বাম হাতটি দ্রুত পরীক্ষা করুন। এটি ওপরের দিকে এবং আপনার কাঁধের শীর্ষের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে।  

আপনার শরীর পাশে বাঁকানো উচিত এবং পিছনে বা সামনে কোন দিকে বাঁকানো যাবে না। আপনার বুক এবং শ্রোণী প্রশস্ত কোরতে হবে।  আপনার পক্ষে যতটা সম্ভব ততটা প্রসারিত করুন এবং আপনার শরীরকে স্থিতিশীল করার দিকে মনোনিবেশ করুন। কয়েক দিনের অনুশীলনের পরে, আপনি সঠিক ভঙ্গিতে আসনটি সম্পাদন করতে সক্ষম হবেন। প্রথমে ডান দিকে, তারপর বাম দিকে এটি করুন। এটি ডানদিকে এক প্রস্থ এবং বাম দিকে এক প্রস্থ। আপনি এইভাবে ৩ থেকে ৫ প্রস্থ করতে পারেন।

YouTube player

পর্বত আসন

প্রথমে একটি ইয়োগা ম্যাটে অথবা আরামদায়ক কোন একটা স্থানে মেরুদণ্ড সেজা রেখে দাঁড়ান। দু’ পায়ের পাতা এক সাথে করে রাখুন। যদি দাঁড়াতে বা ব্যালেন্স করতে সমস্যা হয়, তবে দু’ পায়ের পাতার মাঝে ২-৩ ইঞ্চির মতো আপনি ফাঁকা করে রাখাতে পারেন। দু’হাতের তালু কোমরের দু’পাশে সমানভাবে রাখতে হবে। দু’ হাতের আঙুল একটার সাথে আরেকটা লক করে একসাথে করে ফেলুন। এবার লম্বা করে নিহঃশ্বাস নিন শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত কান বরাবর মাথার উপর তুলে ফেলুন। হাতের দু’ তালু লক অবস্থায় হাতের তালু উপরমুখী করতে হবে। পায়ের গোড়ালি উপরের দিকে তুলে পায়ের আঙুলের উপর ভর করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। মাথা পেছন দিকে সামান্য হেলিয়ে উপরের দিকে তাকানর চেষ্টা কোরতে হবে। সম্পূর্ণ শরীর উপরের দিকে টান টান করে রাখুন যেন শরীরের মাসেল গুলো টান টান ও সুন্দর অনুভব বোধ হয়। চেষ্টা করুন যতটুকু সম্ভব শরীরকে উপর দিকে টেনে তুলতে এবং স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস চালিয়ে যান কিন্তু টান টান ভাব কোন ভাবে কমানো যাবে না।

সুখাসন

প্রথমে শিরদাঁড়া সোজা করে পা সামনের দিকে ছড়িয়ে বসে পরুন। এবার হাঁটু বাকা করে নিয়ে বাঁ দিকের পা ডান দিকের হাঁটুর তলায় রাখুন এবং আপনার ডান দিকের পা বাঁ দিকের হাঁটুর তলায় রাখুন। এবার হাতের তালুদুটো হাঁটুর উপরে রাখুন। মাথা, ঘাড় ও শিরদাঁড়া যেন এক বিন্দুতে সোজা ভাবে থাকে। সোজাসুজি তাকিয়ে স্বাভাবিক শ্বাস নিন। এই ভাবে ৬০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এই আসনের ফলে মন শান্ত হবে এবং উদ্বেগ দূর হবে। সেই সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তিও দূর করবে এই আসনের ফলে।

বিপরীতকরণী আসন

প্রথমে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত দুটোকে পাঁজরের দু’পাশে মাটিতে রাখুন। এবার দম নিতে নিতে পা দুটো জোড়া ও সোজা অবস্থায় যতদূর সম্ভব মাথার উপরে তুলে ফেলুন। হাত দুটো কনুই থেকে ভেঙে কোমরের দু’পাশে ঠেকা দিয়ে ধরে রাখুন। এখন কনুইয়ের উপর ভর দিয়ে পা দুটো আরো উপরে তুলে পায়ের পাতা মাথা বরাবর নিয়ে আসুন। হাত দিয়ে দেহের নিম্নাংশ উপরদিকে ঠেলে ধরে রাখুন। কোমর ভেঙে থাকবে, তবে হাঁটু যেন না ভাঙে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০ সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।

এরপর দম ছাড়তে ছাড়তে পা নামিয়ে হাত আলগা করে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে মুদ্রাটি আবার করুন। এভাবে ২/৩ বার মুদ্রাটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।

Leave a Comment