আসুন জেনে নি রোজা রাখার উপকারিতা কি?

মুসলমানরা ১৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রমজান মাসে ধারাবাহিকভাবে রোজা রেখে আসছে। রোজা ধর্মীয় অনুশীলন ছারাও অসংখ্য স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে থাকে। যা আপনাকে অবাক করবে।আপনি কি জানেন যে প্রাচীন গ্রীকরা শরীরকে সুস্থ রাখতে রোজা রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন? কিছু বিজ্ঞানী এমনকি রোজা রাখার মানসিক ও শারীরিক উপকারিতা নিয়ে গবেষণাও করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনের বেলায় কম খাবার খাওয়া উচ্চ কোলেস্টেরল, হৃদরোগ এবং স্থূলতার মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা উন্নত করে। তবে রোজা রাখার আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে-

রোজা ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। প্রতি বছর রমজান মাসে, প্রত্যেক বিশ্বস্ত মুসলমান সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ পেতে ধর্মীয়ভাবে রোজা রাখেন।
রোজা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুশীলন নয়, এটি বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য নীতিকেও প্রভাবিত করে। এটি শারীরিক এবং মানসিক সুবিধাও প্রদান করে।

আপনি যদি রোজা থাকেন তবে দিনের বেশিরভাগ সময় না খেয়ে থাকতে হয়। এতে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত মেদ ও চর্বি কমে যায়। উপরন্তু, কিডনির বিপজ্জনক বিষ শরীর থেকে প্রস্থান করার অনুমতি দেয়।

শরীরকে ডিটক্সিফাই করার জন্য রোজা একটি কার্যকর পদ্ধতি। যারা ওজন কমাতে চান তারা এই সময়টাকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারেন। কারণ, রোজা ছাড়াও ইফতার ও সেহরির সময় পুষ্টিকর খাবারকে প্রাধান্য দিলে এই সময়ে আপনি সহজেই ওজন কমাতে পারেন।

রমজান জুড়ে নিয়মিত রোজা রাখা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন উচ্চ কোলেস্টেরল, হৃদরোগ এবং স্থূলতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।যেহেতু রোজা রাখার সময় পেট খালি থাকে, তাই হজমের অ্যাসিড ধীরে ধীরে নিঃসৃত হয়, যা হজমের অনেক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য রোজাই একমাত্র বিকল্প। কারণ দীর্ঘক্ষণ রোজা রাখলে শরীরে কোলেস্টেরল ও গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যায়।যারা নিয়মিত উপবাস করে তাদের অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমে যায়। তা ছাড়া, রোজা আপনাকে যে কোনো আসক্তি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে।

রোজা রাখার শারীরিক ও মানসিক উভয় ধরনের উপকারিতা রয়েছে। যেহেতু রোজা ধর্মীয় একটি ইবাদত তাই এটি আপনাকে শান্তি অনুভব করতে সাহায্য করবে অনেকটা। এই সময়ে স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়, যা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করে থাকে।

এ ছাড়া দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার অভ্যাসে আমরা সঠিক পথে চলার শক্তি পাই।। দীর্ঘ সময় ধরে আত্মনিয়ন্ত্রণের কারণে আমরা সহজেই পাপ কাজ এড়াতে পারি।

নিয়মিত রোজা রেখে এবং দ্বীনের পথে চলার মাধ্যমে মানুষ আত্ম-পরীক্ষা ও চিন্তাভাবনার উন্নতি করতে পারে।

রোজার তাৎপর্য স্বীকার করে, ডক্টর আইজ্যাক জেনিংস দাবি করেন যে উপবাস তাদের বাঁচায়, যারা অলসতা এবং ধর্মান্ধতার পাশাপাশি অতিরিক্ত খাওয়ার মাধ্যমে তাদের সংরক্ষিত শক্তিকে নিঃশেষ করে দেয় এবং অবশেষে আত্মহত্যার দিকে নিয়ে যায়।

রোজা রাখার ফলে আমাদের শরীর বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ সহ্য করার ক্ষমতা অর্জন করে। ফলস্বরূপ, রোজাদার ব্যক্তি কখনই খিঁচুনি বা মানসিক অস্থিরতা অনুভব করেন না।

কোরান ও হাদিসে রোজাকে স্পষ্টভাবে সম্বোধন করা হয়েছে। চিকিৎসা ও বিজ্ঞানে রোজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও ইতিবাচকভাবে জীবনদর্শনের জন্য রোজার গুরুত্ব অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

Leave a Comment