পেটের গ্যাস ও গ্যাস্ট্রিক – (অ্যাসিডিটির ঘরোয়া দাওয়াই ও প্রাকৃতিক উপায়ে সমাধান)

পেটের গ্যাস ও গ্যাস্ট্রিক – আলমগীর আলম (অ্যাসিডিটির ঘরোয়া দাওয়াই ও প্রাকৃতিক উপায়ে সমাধান)

এসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা আজকাল নিত্তনৈমিত্তিক একটি ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়ম মেনে খাবার না খাওয়া, অতিরিক্ত ঝাল মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, মানসিক চাপ ও মদ্যপানের কারণে এই রোগ হয়ে হতে পারে। এছাড়া বাইরের খাবার খাওয়া ও অতিমাত্রায় ফাস্টফুডে ভাঁজা পোরা আসক্তির কারণে গ্যাস্টিক সমস্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

গ্যাস্টিকের লক্ষণ:
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে খিদে কমে যায়, পেটে গ্যাস হয়, বুক জ্বালা করে ও পেটের মাঝখানে চিনচিন ব্যথা, বুক ও পেটে চাপ অনুভূত, হজমে অসুবিধা এবং বমি হতে পারে।

গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বেশি হলে সবাই কম বেশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেয়ে থাকেন হয়তো। বিশেষজ্ঞের মতে, ওমিপ্রাজলজাতীয় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বছরের পর বছর খাওয়া সরির এর জন্য বিপজ্জনক। এতে পাকস্থলীর পিএইচ পরিবর্তিত হয়ে যায়, ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে, রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
তবে আপনি জানেন কি- ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে আপনিও মুক্তি পেতে পারেন?

অ্যাসিডিটির ঘরোয়া দাওয়াই ও প্রাকৃতিক উপায়ে সমাধান

তুলসি পাতা– পাকস্থলীতে অতিরিক্ত মিউকাস উৎপাদনে মারাত্মক ভাবে সাহায্য করে। এতে রয়েছে অ্যান্টিআলসার উপাদান, যা গ্যাসট্রিক অ্যাসিডের প্রকোপ কমিয়ে ফেলতে পারে। অ্যাসিডিটি হলে পাঁচ থেকে ছয়টি তুলসি পাতা চিবিয়ে খেলে অনেক টা উপকার হয়।

গ্যাস্টিকের লক্ষণ:
গ্যাস্টিকের লক্ষণ

মৌরি– এতে রয়েছে অ্যান্টি-আলসার উপাদান। মৌরিতে কপার, আয়রন, পটাসিয়াম, সেলেনিয়াম, জিংক ও ম্যাগনেসিয়াম প্রচুর পরিমাণে আছে। মৌরি হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্টকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। অ্যাসিড হলে কিছু পরিমাণ মৌরি খেলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদি ফল পেতে জলে কিছু মৌরি ফেলে ফুটিয়ে রাতে রেখে দিতে হবে। পরের দিন অ্যাসিডিটির কারণে যখন অসুবিধা হবে, তখন তা পান করতে হবে।

ঠাণ্ডা দুধ- ঠাণ্ডা দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে, যা অ্যাসিড উৎপাদন কমায় এবং অতিরিক্ত অ্যাসিড শোষণ করে। অ্যাসিড অস্বস্তি উপশম করতে, ঠান্ডা দুধ পান করুন। এতে, কোন চিনি যোগ করবেন না। অ্যাসিডিটি প্রতিরোধে আরও ভাল ফলাফল পেতে, এক গ্লাস দুধের সাথে এক চামচ ঘি মিশিয়ে নিন।

আদা- আদা হজমের জন্য উপকারী। মুখে, আদা লালা তৈরি করে। এটি শ্লেষ্মা নিঃসরণ বাড়িয়ে পেটের আলসার প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। অ্যাসিড থেকে মুক্তি পেতে মুখে অল্প করে আদার টুকরো রাখুন। অধিকন্তু, আদা ফুটিয়ে ও ঠান্ডা করলে ফল পাওয়া যায়। তাছাড়া আদাবেটে তালগুরের ছোট ছোট টুকরার সাথে মিশিয়ে মুখে নিয়ে চুষে খেতে পারলে উপকার পাওয়া যায়।

জিরা: জিরা মুখের লালা উত্‍‌পাদনে উদ্দীপিত করে, যা হজম এবং বিপাককে সহায়তা করে। এটি পেট ফাঁপা এবং অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ব্যাধি থেকে মুক্তি দেয়। আয়ুর্বেদিক শিক্ষা অনুসারে যে কোনও কারণেই মন খারাপ থাকলে এটি পেট ঠান্ডা করতে সাহায্য করে। তা ছাড়াও, জিরা পেটের আলসারে নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে। কিছু জিরা চিবিয়ে বা জলে ফুটিয়ে পান করুন অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাবেন।

লবঙ্গ – লবঙ্গ হজমে সাহায্য করে এবং মুখের অতিরিক্ত লালা বের করে অ্যাসিডিটি কমায়। অম্লতা হলে লবঙ্গ মুখে রাখুন এবং একবার কামড় দিয়ে রস বের হতে দিন।এরপর মুখে রাখুন। এবং ধীরে ধীরে নির্গত লবঙ্গ রস অ্যাসিডিক প্রভাব প্রশমিত করে এবং স্বস্তি প্রদান করে।

এলাচ- হজমে সাহায্য করে। দুটি ছোট এলাচের বীজ পানিতে সিদ্ধ করে ঠান্ডা হলে খেলে অ্যাসিডিটি দূর হয়ে যাবে।

YouTube player

Leave a Comment