ব্যায়াম হচ্ছে শরীর ও মস্তিষ্কের বন্ধু!

ব্যায়াম আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি প্রয়োজনীয় জিনিস। ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কমবেশি জানলেও তা করতে অনীহা রয়েছে। বডি বিল্ডাররা যারা জিমে যায় তাদের ভিন্ন মতামত আছে, কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষ “আজ নয়, আগামীকাল” নীতিতে ব্যায়াম এড়িয়ে চলি। ফলস্বরূপ, আজকাল স্থূলতা, করোনারি রোগ ইত্যাদির হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

এই প্রবন্ধে ব্যায়াম কি, ব্যায়ামের উপকারিতা কি, কোন ব্যায়াম আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে পারে- ইত্যাদি আলোচনা করা হবে। এছাড়া ঘরে বসে ব্যায়াম করার নিয়ম, এর সুবিধা-অসুবিধা নিয়েও আলোচনা করা হবে। এছাড়া যোগ ব্যায়াম করার নিয়ম, যোগ ব্যায়ামের উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। প্রথমেই দেখা যাক ব্যায়াম কি।

ব্যায়াম কি?
ব্যায়াম কি সে সম্পর্কে প্রায় সবারই ধারণা আছে। সায়েন্স ডেইলির মতে, শারীরিক ব্যায়াম হল শারীরিক সুস্থতা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের বিকাশ বা বজায় রাখার জন্য কিছু কার্যকলাপের কর্মক্ষমতা। অতএব, ব্যায়াম হল একধরনের শারীরিক কার্যকলাপ, যা পরিকল্পিত, কাঠামোগত এবং পুনরাবৃত্তিমূলক এবং যার মূল উদ্দেশ্য হল শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখা।

ব্যায়ামের উপকারিতা ও ব্যায়াম কেন কোরবেন?
সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা প্রয়োজন। শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে এবং শরীরের ওজনের ভারসাম্য বজায় রাখতে ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও, মজবুত হাড়, পেশীর শক্তি এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক গতিশীলতা বজায় রাখতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই।

ব্যায়াম না করলে ধীরে ধীরে আপনার পেশি দুর্বল হয়ে যাবে এবং শরীরে নানা রোগের ঝুঁকি বাড়বে। তবে হ্যাঁ, শুধুমাত্র ব্যায়ামের নিয়ম মেনে নিখুঁত ফলাফল পাওয়া সম্ভব। ব্যায়ামের নিয়মগুলো একটু পরে আমাদের আলোচনায় আসবে, তবে তার আগে চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেই ব্যায়ামের উপকারিতাগুলো।

রোগ প্রতিরোধ:
আমরা সাধারণত শারীরিক সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য ব্যায়াম করি। কিন্তু সুস্বাস্থ্য ছাড়াও বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক ব্যায়াম হৃদরোগ, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং আরও অনেক রোগের ঝুঁকি কমায়।

শক্তি এবং ভারসাম্য বাড়ায়:
অ্যানেরোবিক ব্যায়াম নামে এক ধরণের ব্যায়াম আছে যা আপনার শরীরের শক্তি, পেশী এবং হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করবে এবং শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে। অ্যানেরোবিক ব্যায়াম বলতে আমরা সাধারণত পুশ-আপ, বাইসেপ কার্ল, পুল-আপ ইত্যাদি বুঝি।

বর্ধিত নমনীয়তা:
ব্যায়াম আপনার শরীরের পেশী প্রসারিত এবং বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। এটি আপনার শরীরের অঙ্গগুলির সঞ্চালন বাড়াবে যার ফলে আঘাতের ঝুঁকি হ্রাস পাবে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অংশের নমনীয়তা বাড়বে। ফলে আপনি আগের থেকে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।

ওজন নিয়ন্ত্রণ:
ব্যায়ামের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করার সময় ওজন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি উঠে আসে। প্রতিদিন কমপক্ষে 20 থেকে 30 মিনিট ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন শারীরিক ব্যায়াম করা সম্ভব না হলে সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন শারীরিক ব্যায়াম করা উচিত। আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন এবং কম চর্বিযুক্ত খাবার খান, তাহলে দেখবেন আপনার ওজন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। তাই যারা ওজন বাড়া নিয়ে চিন্তিত তাদের উচিত নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা এবং নিয়ম মেনে চলা। দেখবেন ওজন ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসবে।

Leave a Comment